শিল্প বিপ্লব মানুষের জীবনযাত্রাকে যেমন বদলে দিয়েছে, তেমনি গড়ে তুলেছে আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি। আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখছে বৃহৎ সব বহুজাতিক কোম্পানি। তাদের উদ্ভাবন, প্রযুক্তি, ব্যবসায়িক মডেল এবং বৈশ্বিক প্রভাব গোটা পৃথিবীকে একেবারে নতুন পথে নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ২০টি কোম্পানি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো—
২০. কোকা-কোলা
পানীয় জগতে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্র্যান্ড কোকা-কোলা। ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই আমেরিকান কোম্পানির পানীয় প্রতিদিন পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তেই বিক্রি হয়। তাদের পণ্যের বৈচিত্র্য এবং বিশ্বব্যাপী চাহিদা কোকা-কোলাকে সর্ববৃহৎ ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রেখেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০টি সোশ্যাল মিডিয়া ২০২৫
১৯. টয়োটা
জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টয়োটা বিশ্বের অন্যতম নির্ভরযোগ্য মোটরগাড়ি নির্মাতা। ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা হাইব্রিড গাড়ি এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির মাধ্যমে বাজারে নেতৃত্ব ধরে রেখেছে।
১৮. বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে
ওয়ারেন বাফেটের কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। বীমা, জ্বালানি, রেলপথ থেকে শুরু করে অগণিত ব্যবসায়িক খাতে তাদের বিনিয়োগ রয়েছে।
১৭. নেসলে
বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্য ও পানীয় কোম্পানি নেসলে। সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক এই ব্র্যান্ডের পণ্য প্রায় ১৮৯টি দেশে বিক্রি হয়। কফি, চকলেট, শিশুখাদ্য—সবক্ষেত্রেই নেসলে শীর্ষে।
১৬. প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল (P&G)
প্রতিদিনকার ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে P&G একটি বৈশ্বিক জায়ান্ট। শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট থেকে শুরু করে বেবি কেয়ার পণ্য—সবক্ষেত্রেই তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য।
১৫. টেনসেন্ট
চীনের টেক জায়ান্ট টেনসেন্ট মূলত সোশ্যাল মিডিয়া, গেমিং এবং ডিজিটাল পরিষেবায় বিশ্বনেতা। তাদের জনপ্রিয় অ্যাপ উইচ্যাট কেবল চীনে নয়, সারা বিশ্বেই ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
১৪. এক্সনমোবিল
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোর একটি এক্সনমোবিল। টেক্সাস ভিত্তিক এই আমেরিকান জায়ান্টের অর্থনৈতিক শক্তি জ্বালানি শিল্পকে দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করছে।
১৩. জনসন অ্যান্ড জনসন
স্বাস্থ্যসেবা ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে জনসন অ্যান্ড জনসন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি। ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং কনজ্যুমার হেলথ প্রোডাক্টে তারা শীর্ষে।
১২. সনি
জাপানি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সনি বিনোদন, ইলেকট্রনিক্স ও গেমিং দুনিয়ায় বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব ধরে রেখেছে। প্লে-স্টেশন কনসোল থেকে শুরু করে মিউজিক ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও তাদের শক্ত অবস্থান রয়েছে।
১১. গুগল (অ্যালফাবেট)
আজকের দিনে ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন বললেই মাথায় আসে গুগল। সার্চ ইঞ্জিন, ইউটিউব, অ্যান্ড্রয়েড, ক্লাউড সেবা—সবকিছুতেই আধিপত্য গুগলের। বর্তমানে তাদের মূল কোম্পানি হলো অ্যালফাবেট।
প্রযুক্তিতে সবচেয়ে উন্নত বিশ্বের ৭টি শহর – ২০২৫
১০. মাইক্রোসফট
১৯৭৫ সালে বিল গেটস ও পল অ্যালেন প্রতিষ্ঠিত মাইক্রোসফট সফটওয়্যার জগতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। উইন্ডোজ, অফিস স্যুট, ক্লাউড কম্পিউটিং—সবক্ষেত্রেই তারা শীর্ষে।
৯. আইবিএম
১৯১১ সালে যাত্রা শুরু করা আইবিএম এখনো বৈশ্বিক প্রযুক্তি জায়ান্ট। মেইনফ্রেম কম্পিউটার থেকে শুরু করে এআই ও ন্যানোটেকনোলজিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
৮. আমাজন
জেফ বেজোসের হাত ধরে ১৯৯৪ সালে অনলাইনে বই বিক্রির মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল আমাজনের পথচলা। আজ এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এবং ক্লাউড সার্ভিস প্রোভাইডার।
৭. অ্যাপল
আইফোন, আইপ্যাড ও ম্যাকবুকের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত অ্যাপল এক বিশাল প্রযুক্তি সাম্রাজ্য। বিশ্বের প্রথম কোম্পানি হিসেবে এক ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্যে পৌঁছেছিল তারা।
৬. স্যামসাং
দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রতিষ্ঠান স্মার্টফোন, টিভি, ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে অবকাঠামো উন্নয়নেও শীর্ষে। বুর্জ খলিফা নির্মাণেও অংশ নিয়েছিল স্যামসাং।
৫. ওরাকল
ডাটাবেজ সফটওয়্যারে বিশ্বনেতা ওরাকল। এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার ও ক্লাউড সল্যুশনে এর দাপট রয়েছে গোটা পৃথিবীতে।
৪. ওয়ালমার্ট
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্ট। সুপারস্টোর, ই-কমার্স—সবক্ষেত্রেই তাদের উপস্থিতি শক্তিশালী।
৩. ফক্সওয়াগন
জার্মান মোটরগাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফক্সওয়াগন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় তাদের বিখ্যাত গাড়ি মডেলগুলোর জন্য।
২. ফেসবুক (মেটা)
মার্ক জাকারবার্গ প্রতিষ্ঠিত ফেসবুক আজকের দিনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বর্তমানে মেটা নামে কোম্পানিটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং মেটাভার্সে বিনিয়োগ করছে।
১. গুগল
তালিকার শীর্ষে রয়েছে গুগল। সার্চ ইঞ্জিন থেকে শুরু করে স্মার্ট টেকনোলজি, এআই, ক্লাউড কম্পিউটিং—সবক্ষেত্রেই তাদের দাপট সর্বাধিক।
এই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ২০টি কোম্পানি।
তাদের উদ্ভাবন, প্রযুক্তি, ব্যবসায়িক কৌশল এবং মানুষের জীবনে প্রভাব—সব মিলিয়ে তারা আজকের পৃথিবীকে গড়ে তুলেছে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী।