চর্বি আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু সব চর্বি সমান উপকারী নয়। কেউ উপকার করে, কেউ আবার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ কারণেই সচেতনভাবে ভালো চর্বি বেছে নেওয়া এবং খারাপ চর্বি এড়ানো জরুরি।
ভালো চর্বি
(HDL – High Density Lipoprotein)
HDL কে বলা হয় “ভালো কোলেস্টেরল”। কারণ এটি শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে অতিরিক্ত চর্বি সংগ্রহ করে যকৃতে নিয়ে যায়, যেখানে সেগুলো ভেঙে যায় বা বেরিয়ে যায়।
রক্তনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
সামুদ্রিক মাছ, বাদাম, অলিভ অয়েল, ফ্ল্যাক্সসিড, অ্যাভোকাডো—এসব খাবারে এই ভালো চর্বি থাকে।
ডায়রিয়া ছাড়াও যেসব কারণে স্যালাইন খেতে পারেন
খারাপ চর্বি
(LDL – Low Density Lipoprotein)
LDL কে বলা হয় “খারাপ কোলেস্টেরল”। কারণ এটি রক্তনালীর দেয়ালে জমে প্লাক তৈরি করে।এতে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, প্যারালাইসিসের ঝুঁকি বাড়ে।
ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার, ট্রান্সফ্যাট ও অতিরিক্ত লাল মাংস LDL বাড়ায়।
কোলেস্টেরল জমার ফল
- রক্তনালী ব্লক হয়।
- হার্টের ধমনিতে জমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
- মস্তিষ্কে জমে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
- যকৃতে জমে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।
কেন কোলেস্টেরল বাড়ে
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস (অতিরিক্ত তেল-ভাজা, ফাস্ট ফুড, স্যাচুরেটেড ফ্যাট)।
- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন।
- ধূমপান ও মদ্যপান।
- ব্যায়ামের অভাব ও অলস জীবনযাপন।
- বংশগত কারণ।
কোন খাবারে সাবধানতা দরকার
- ভাজাপোড়া খাবার ও ফাস্ট ফুড: সিঙ্গারা, সমুচা, পরোটা, তেলে ভাজা সবজি।
- গরু-খাসির চর্বিযুক্ত মাংস: সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
- চিংড়ি মাছ: কোলেস্টেরল বেশি, সপ্তাহে একবার সীমিত পরিমাণে যথেষ্ট।
- ঘি ও প্রক্রিয়াজাত তেল: ট্রান্সফ্যাট বেশি থাকে।
সতেজতার জন্য কোমল পানীয় পান করে নিস্তেজতা ডেকে আনছেন না তো?
কোন খাবার বেশি খাওয়া উচিত
- সামুদ্রিক মাছ ও দেশি মাছ (ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ)।
- বাদাম, বীজ ও অলিভ অয়েল।
- শাকসবজি ও তাজা ফল।
- দুধ ও চিজ সীমিত পরিমাণে।
প্রতিরোধের উপায়
- নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম (প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট)।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
- ধূমপান-মদ্যপান পরিহার করা।
- ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
- ঘরে তৈরি খাবার খাওয়া, বাইরে তেলচুপচুপে খাবার এড়ানো।
- ৪০ বছরের পর থেকে নিয়মিত লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করা।
সহজ কথায়, HDL বাড়ানো আর LDL কমানোই হলো চর্বি নিয়ন্ত্রণের মূল কৌশল।