বিশ্বের অনেক দেশ এখনো দারিদ্র্যের চক্রে আটকে আছে। যুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো কারণগুলো এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০২৫ সালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মাথাপিছু আয় সবচেয়ে কম এমন ১০টি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরা হলো।
১. সাউথ সুদান
এদেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ৪৫৫ মার্কিন ডলার।এটি আফ্রিকার নবীনতম দেশ হলেও স্বাধীনতার পর থেকেই সশস্ত্র সংঘাত ও রাজনৈতিক সহিংসতায় জর্জরিত। তেল সম্পদ থাকলেও তা থেকে জনগণ উল্লেখযোগ্য সুবিধা পাচ্ছে না।
২. বুরুন্ডি
এখানে মাথাপিছু আয় প্রায় ৯১৬ ডলার
দেশটির প্রায় ৮০% মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বল অবকাঠামো এবং সীমিত বাজার প্রবেশাধিকারের কারণে অর্থনীতি স্থবির।
উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য
৩. মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র
মাথাপিছু আয় প্রায় ১,১২৩ ডলার
প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিনের সংঘাত ও দুর্নীতির কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমছে এবং শিল্পখাত উন্নত হতে পারছে না।
৪. কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,৫৫২ ডলার। এটি বিশ্বের অন্যতম খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ দেশ, কিন্তু গৃহযুদ্ধ, দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা উন্নয়নের পথে বড় বাধা।
৫. মোজাম্বিক
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,৬৪৯ ডলার
এখানে প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার সম্ভাবনা থাকলেও ঋণের বোঝা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অপরিকল্পিত নীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিয়েছে।
৬. নাইজার
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,৬৭৫ ডলার।
তেল ও ইউরেনিয়ামের মজুদ থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা ও রাজনৈতিক সংকট উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে।
৭. মালাউই
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,৭১২ ডলার
কৃষিনির্ভর এই দেশ দুর্নীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে দুর্বল বিনিয়োগ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পিছিয়ে আছে।

৮. লাইবেরিয়া
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,৮৮২ ডলার
গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও দুর্নীতি ও বৈদেশিক ঋণখেলাপি সমস্যাকে স্থায়ী করেছে।
৯. মাডাগাস্কার
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,৯৭৯ ডলার
জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বল অবকাঠামো ও বিনিয়োগের অভাবে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।
উন্নত দেশের অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য
১০. ইয়েমেন
মাথাপিছু আয়: প্রায় ১,৯৯৬ ডলার
দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট, এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দেশটিকে বিশ্বের দরিদ্রতম দেশের তালিকায় রেখেছে।তবে এখানে দারিদ্রতার প্রধান কারণ- রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যুদ্ধ, দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে সীমিত বিনিয়োগ, বৈদেশিক ঋণের চাপ, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার
শেষকথা
২০২৫ সালেও অনেক দেশ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে লড়াই করছে। সঠিক নেতৃত্ব, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও সম্পদের সঠিক ব্যবহারই তাদের উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হতে পারে।