জীবনে সমস্যার শেষ নেই। কখনো ছোট, কখনো বড়—একটার সমাধান হয়, আবার আরেকটা এসে দাঁড়ায়। ঠিক এই অবস্থার মধ্যেই একদিন এক মেয়ে তার বাবার কাছে অভিযোগ করল, “আমার জীবন আর ভালো লাগছে না। সবসময় ঝামেলা, সবসময় সমস্যা। আমি ক্লান্ত।”
বাবা ছিলেন একজন শেফ। মেয়ের দীর্ঘশ্বাস আর অভিযোগ শোনার পর তিনি কোনো উত্তর দিলেন না। বরং নীরবে মেয়েকে নিয়ে গেলেন রান্নাঘরে। সেখানে তিনটি পাত্রে পানি ভরে আগুনে বসালেন। পানি ফুটতে শুরু করলে প্রথমটিতে রাখলেন কিছু আলু, দ্বিতীয়টিতে ডিম আর শেষটিতে দিলেন কফি দানা। মেয়েটি অবাক হয়ে দেখছিল—কিন্তু এখনো কোনো ব্যাখ্যা পাচ্ছে না।
যেভাবে মানুষের মাঝে ভালোভাবে কথা বলার দক্ষতা অর্জন করবেন
কিছুক্ষণ পর বাবা চুলা বন্ধ করলেন। ফুটন্ত পানি থেকে আলুগুলো বের করে এক বাটিতে রাখলেন, ডিমগুলো অন্য বাটিতে আর কফি ঢাললেন এক কাপেতে। তারপর মেয়েকে বললেন—“এবার দেখো।”
মেয়েটি বিরক্ত ভঙ্গিতে উত্তর দিল, “এগুলো তো আলু, ডিম আর কফি।”
বাবা শান্তভাবে বললেন, “ভালো করে খেয়াল করো।”
মেয়েটি হাত দিয়ে আলু ছুঁয়ে দেখল, যেগুলো রান্নার আগে ছিল শক্ত, এখন সেগুলো একেবারে নরম হয়ে গেছে। এরপর একটি ডিম ভেঙে দেখল, ভেতরটা সিদ্ধ হয়ে একেবারে শক্ত। সবশেষে কফি মুখে দিল—অপূর্ব সুগন্ধ আর স্বাদে তার মুখে হাসি ফুটল।তখন বাবা ব্যাখ্যা করলেন, “এই তিনটি জিনিসই একসাথে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল—ফুটন্ত পানির। কিন্তু প্রতিক্রিয়া তিন রকম। শক্ত আলু নরম হয়ে গেল, ভঙ্গুর ডিম শক্ত হয়ে গেল, আর কফি? সে নিজে বদলায়নি, বরং চারপাশের পানিকেই বদলে দিয়েছে। জীবনেও পরিস্থিতি সবসময় আমাদের পরীক্ষা নেবে। তুমি আলুর মতো ভেঙে পড়তে পারো, ডিমের মতো বদলে যেতে পারো, অথবা কফির মতো সাহসী হয়ে চারপাশকেই পরিবর্তন করতে পারো।”
মেয়েটি তখন গভীরভাবে বুঝতে পারল, সমস্যার কাছে হার মেনে কাঁদা নয়—বরং সমস্যাকে সুযোগে পরিণত করাই জীবনের আসল শিক্ষা।