Tuesday, September 16, 2025
Google search engine
Homeস্বাস্থ্যএন্টিবায়োটিক যেভাবে বিপদ ডেকে আনতে পারে

এন্টিবায়োটিক যেভাবে বিপদ ডেকে আনতে পারে

অসুখ হলে বা শরীর খারাপ হলে ডাক্তারদের পরামর্শে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়। জীবনে অন্তত একবার হলেও প্রায় সবাই এই ওষুধ ব্যবহার করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—অ্যান্টিবায়োটিক কি সবসময় নিরাপদ? সামান্য অসুখে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রয়োজন আছে কি? আর যদি ডোজ অসম্পূর্ণ রাখা হয় তাহলে কী বিপদ হতে পারে? চলুন জানি।

অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে কাজ করে

“অ্যান্টি” মানে রোধ করা বা প্রতিরোধের ক্ষমতা। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে সেই জীবাণুকে ধ্বংস করার জন্য তৈরি হয় অ্যান্টিবায়োটিক। অনেকেই জানেন না, অ্যান্টিবায়োটিকও আসলে একধরনের জীবাণু থেকে তৈরি ওষুধ, যা অন্য ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। এক কথায়, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতোই কাজ করে অ্যান্টিবায়োটিক।

ডোজ সম্পূর্ণ করা কেন জরুরি

অ্যান্টিবায়োটিকের একটি নির্দিষ্ট ডোজ থাকে। ডাক্তার যে সময় পর্যন্ত খেতে বলেন, সেটা অবশ্যই শেষ করতে হবে। কারণ—যদি মাঝপথে খাওয়া বন্ধ করেন, কিছু জীবাণু বেঁচে যায়। ওই জীবাণুগুলো আবার দেহে বৃদ্ধি পায়। তখন আগের অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করে না।

ফলে সংক্রমণ সারার বদলে আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

রেজিস্ট্যান্স তৈরি

একই অ্যান্টিবায়োটিক বারবার ব্যবহার করলে জীবাণুর ডিএনএ ধীরে ধীরে *রোধী ক্ষমতা (Resistance)* তৈরি করে। তখন সেই ওষুধ আর কোনো কাজে আসে না। বড় অসুখে আগের ওষুধ অকার্যকর হয়ে পড়ে, আর দরকার হয় আরও শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল অ্যান্টিবায়োটিক।

এটা অনেকটা যুদ্ধের মতো। বারবার একই অস্ত্র ব্যবহার করলে শত্রু কৌশল শিখে ফেলে, আর সেই অস্ত্র আর কাজে লাগে না। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার

আমাদের দেশে সামান্য জ্বর, ঠান্ডা বা গলা ব্যথাতেও অনেক সময় অনেকেই ফার্মেসিতে গিয়ে নিজেরাই কিনে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলেন, যা একেবারেই ভুল।  উন্নত দেশগুলোতে কড়া নিয়ম আছে— কোনো ডাক্তার  ছাড়া  কেউ অ্যান্টিবায়োটিক লিখতে বা কিনতে পারেন না।

 অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষতি

*রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া তৈরি* হয়ে যায়, যেগুলো আর সহজে মারা যায় না।

* সাধারণ অসুখও তখন বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।

* কিডনি, লিভারসহ শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

* শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে আরও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

করণীয়

* কোনো অবস্থাতেই নিজের ইচ্ছায় অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।

* ডাক্তার যে ডোজ লিখবেন, তা সম্পূর্ণ করুন।

* সামান্য অসুখে অযথা অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে বিশ্রাম, পুষ্টিকর খাবার ও সাধারণ ওষুধে ভরসা রাখুন।

* প্রয়োজনে দ্বিতীয় মতামত নিন।

 শেষকথা

অ্যান্টিবায়োটিক জীবনরক্ষাকারী ওষুধ বটে, তবে এর অপব্যবহার ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরামর্শ মেনে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখবেন—অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে আজ সাময়িক স্বস্তি 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular