কেন উদ্যোক্তা হতে গেলে ভুল ধারণা আমাদের পিছিয়ে দেয়
অনেকেই মনে করেন উদ্যোক্তা হতে হলে প্রচুর টাকা, বিশাল ইউনিক আইডিয়া বা অগাধ পরিশ্রম দরকার। কিন্তু ডেভিড জেসন তার বইয়ে প্রমাণ করেছেন—ব্যবসা শুরু করা আসলে এত জটিল নয়। বরং প্রফিটেবল ও সাসটেইনেবল ছোট একটি আইডিয়া দিয়েই শুরু করা যায়।
ডেভিড জেসনের চারটি মূলনীতি
১. Scratch the Itch – নিজের সমস্যার সমাধান থেকে ব্যবসা শুরু করুন:
যে সমস্যা আপনাকে বা আপনার চারপাশকে বিরক্ত করছে, সেটির সমাধানই হতে পারে নতুন ব্যবসার ভিত্তি।
ভিক ফির্থ ড্রামস্টিকের ওজন সমান না হওয়ায় নিজেই সমাধান খুঁজে বের করেন এবং তৈরি করেন বিশ্বের বৃহত্তম ড্রামস্টিক কোম্পানি।
বিল বউম্যান নিজের খেলোয়াড়দের জন্য হালকা দৌড়ানোর জুতা না পেয়ে বানিয়েছিলেন নাইক-এর প্রথম জুতা।
লেখক নিজেই তৈরি করেছিলেন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, যখন বাজারে ভালো টুলস পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ থেকেই বোঝা যায়—অন্যের সমস্যায় নয়, বরং নিজের সমস্যার সমাধান থেকে শুরু করলে সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
২. Core Minimum – শুরু করুন ছোট থেকে, কিন্তু মূল জিনিসটিতে ফোকাস রাখুন:
শুরুতেই চটকদার অফিস, অনেক কর্মচারী বা অতিরিক্ত খরচে ঝাঁপিয়ে পড়ার দরকার নেই।
রসমালাই ব্যবসার মূল শক্তি এর স্বাদ, দোকান নয়।
লেখক প্রথমে শেয়ার্ড অফিসে কাজ শুরু করেছিলেন, নিজেরাই কাস্টমার সাপোর্ট করতেন।
প্রথমে প্রোডাক্টকে কার্যকর করা সবচেয়ে জরুরি, পরে ধীরে ধীরে ব্যবসার অন্যান্য দিক বড় করা যেতে পারে।
৩. Fight Passionately – প্রতিযোগিতায় আলাদা হয়ে উঠুন:
শুধু সমস্যা সমাধান করাই যথেষ্ট নয়, বরং বাজারে কিভাবে আলাদা হবেন সেটাই আসল চ্যালেঞ্জ।
ডানকিন ডোনাটস নিজেদের পরিচয় দিত “অ্যান্টি-স্টারবাকস” হিসেবে।
স্প্রাইট বিজ্ঞাপনে বলেছে “স্প্রাইট ইজ ক্লিয়ার”, যা পরোক্ষভাবে অন্যান্য কোমল পানীয়র বিরুদ্ধে এক ধরনের লড়াই।
নিজের প্রোডাক্টকে যুক্তি ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করে তুলতে হবে।
৪. With Less – কম সুবিধা, বেশি মান:
সাফল্য আসে সংখ্যা বাড়ালে নয়, বরং মান ধরে রাখলে।
অনেক রেস্টুরেন্ট অসংখ্য আইটেম দেয় কিন্তু মান রক্ষা করতে পারে না। অন্যদিকে কিছু রেস্টুরেন্ট অল্প আইটেম দিয়েও মান বজায় রেখে জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
হার্ভার্ড বা কেমব্রিজ সারা বিশ্বে ব্রাঞ্চ খোলেনি, কারণ কোয়ালিটি কমে যাবে।
ব্যবসার শুরুতে তাই কম প্রোডাক্ট দিয়ে হলেও মান বজায় রাখতে হবে।
উপসংহার
ডেভিড জেসনের মতে, ব্যর্থতা থেকে শেখা মানে শুধু কী করা উচিত নয় সেটা বোঝা। কিন্তু সাফল্য থেকে শেখা মানে কী করলে সফল হওয়া যায় সেটা জানা। তাই সফল উদ্যোক্তাদের কৌশল অনুসরণ করেই এগোতে হবে।